একটা সেলফি তুলতে পারি?’
নিউজ ডেস্ক | ৯:২৮ পূর্বাহ্ন, ২১ নভেম্বর, ২০১৯
অনেকেই তাঁর আসল নামটা জানে না। সবাই চেনে ঝুমুর নামে। “নিজের নামই ভুলে যাওয়ার দশা। কিছুদিন আগে ফ্যামিলির সঙ্গে শপিং করতে গিয়েছিলাম, পিচ্চি দুই ভাই-বোন আমার সঙ্গে সেলফি তোলার আবদার নিয়ে এসে বলে, ‘ঝুমুর আপু, তোমার সঙ্গে একটা সেলফি তুলতে পারি?’ ধানমণ্ডি লেকে গিয়েছিলাম ফটোশুটে, সেখানেও সেলফিশিকারিরা ডাকছে ঝুমুর নামে। অবশ্য আমি বিষয়টা বেশ উপভোগ করছি’’—বললেন সারিকা।
পারিবারিক টানাপড়েন ও ভাঙনের গল্প নিয়ে মোস্তফা কামাল রাজের ধারাবাহিক ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’, এখানে সারিকার নাম ঝুমুর। দারুণ জনপ্রিয় হয়েছে চরিত্রটি, অন্তর্জালেও ঘুরছে ধারাবাহিকের মজার কিছু ক্লিপিং। রিয়ালিটি শো ‘কে হবে মাসুদ রানা’র একটা পর্বে অভিনয় করেছিলেন সারিকা। সেখানেই পরিচালক রাজকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, সামনে কি কাজ করবেন? তখনই সারিকাকে ধারাবাহিকটিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলেন রাজ।
সারিকা বলেন, ‘পাণ্ডুলিপি পড়ার পর ঝুমুর চরিত্রটা ভালো লাগে আমার। প্রচার শুরু হওয়ার প্রথম দিকেই ভালো ফিডব্যাক পেলাম দর্শকের। তারপর পরিচালক-নাট্যকার মিলে চরিত্রটা আরো গুরুত্ব দিয়ে উপস্থাপন করতে থাকেন।’
প্রায় ৭০ পর্ব প্রচারিত হয়েছে ধারাবাহিকটির। ১০৫ পর্বে শেষ হওয়ার কথা। এই ধারাবাহিকে অভিনয় করে তরুণদের মনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন সারিকা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তরুণরা ভালোই চর্চা করছেন সারিকাকে নিয়ে, কাব্যচর্চাও করছেন কেউ কেউ। এসব নজর এড়ায়নি অভিনেত্রীরও, ‘আসলে ঝুমুর চরিত্রটা এত সুইট, এত ইনোসেন্ট—যেকোনো ছেলেই এমন মেয়ে পছন্দ করবে। ছেলেরা সাধারণত শান্ত প্রকৃতির মেয়ে পছন্দ করে। আর ঝুমুর ঠিক পাশের বাড়ির মেয়ে, যার প্রতি সব ছেলেরই একটা আলাদা মায়া থাকে। ঝুমুরের পায়ে সমস্যা, সারাক্ষণ চুপচাপ থাকে। সবারটা বোঝার চেষ্টা করে; কিন্তু তারটা কেউ বোঝার চেষ্টা করে না—এ কারণেও ঝুমুরের প্রতি সবার একটা আলাদা মায়া তৈরি হয়েছে।’
আরো কয়েকটি ধারাবাহিকে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন; কিন্তু করছেন না। এই ধারাবাহিক শেষ হওয়ার আগে করবেনও না, ‘ঝুমুর চরিত্রটা আমার এতটাই পছন্দ, এটি করার সময় অন্য কোনো চরিত্রের ভেতর ঢুকতে চাই না।’
অনেকেই সারিকাকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি কি আসলেই খোঁড়া? মজার ঘটনাও আছে, “এক কলিগের বাসায় দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম। আমাকে দেখে সেই কলিগের মা বললেন, ‘আমি তো মনে করতাম তুমি সত্যিই খোঁড়া।’ একজন অভিনেতার মা মনে করছে আমি খোঁড়া! তবে শুটিংয়ের সময় নিজেকে খোঁড়াই ভাবি। শুটিং শেষে যখন বাসায় আসি, অনেক সময়ই বেখেয়ালে নরমালি না হেঁটে খোঁড়াদের মতো হাঁটি। চরিত্রের মধ্যে এতটাই ঢুকে আছি যে বাসায় ফিরেও আমি ঝুমুরই থাকি।”
সারিকার শুরুটা দেড় বছর আগে, আদনান আল রাজীবের নির্মাণে বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হয়ে। এরপর রেদওয়ান রনি, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীসহ আরো অনেকের নির্মাণে মডেল হয়েছেন। নাটকে এলেন ২০১৮ সালের ঈদে, কাজল আরেফিন অমির নাটক ‘মেয়ে’তে। এই জানুয়ারি থেকে নিয়মিত হয়েছেন অভিনয়ে। কাজল আরেফিন অমির ‘লাভ ইউ বাইট’, ‘জাস্ট চিল’, ‘মুঠো ফোন’, ‘মিশন বরিশাল’, মোস্তফা কামাল রাজের ‘প্লে বয়’, রুশো আহমেদের ‘লাভলি ওয়াইফ’সহ প্রায় ২০টি নাটকে অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের কথা এখনই ভাবছেন না। অভিনয়ে আরো দখল এলে ভেবে দেখবেন।
জন্ম ও বেড়ে ওঠা রংপুরে। ঢাকায় এসেছেন পড়তে। কিছুদিন আগেই কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক করে বেরিয়েছেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে। অভিনয়ের বাইরে আপাতত কিছুই করছেন না। তবে সামনেই মাস্টার্সে ভর্তি হবেন।
সূত্র: কালের কন্ঠ