সেকায়েপের মডেল শিক্ষকরা হতাশ: প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা
নিউজ ডেস্ক | ১০:১৮ অপরাহ্ন, ২০ আগস্ট, ২০২০
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন যে,বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন “সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি এ্যান্ড অ্যাকসেস এনহেন্সম্যান্ট প্রজেক্ট(সেকায়েপ)”কর্তৃক ৬১ জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় এম.পি.ও, নন এম.পি.ও এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ৫২০০ জন(পাঁচ হাজার দুইশত) বিষয়ভিত্তিক (ইংরেজি,গণিত এবং বিজ্ঞান) অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক (এসিটি) আজ চরম হতাশার মধ্যে নিমজ্জিত।শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা এবং আশার আলো জ্বালাতে এসে আজ তারাই চরম হতাশা এবং অন্ধকারে নিমজ্জিত।
আপনার সদয় অবগতি ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জানানো যাচ্ছে যে,বিশ্বব্যাংক এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ২০০৮ সালে চালু করা হয় সেকায়েপ প্রকল্প এবং সেই সেকায়েপ প্রকল্পে ২০১৫ সালে শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধির জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কম্পোনেন্ট “অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক (এসিটি)” নিয়োগ করা হয় যা শিক্ষাক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।এই এসিটি শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাসের বাইরে তাদের নিজ নিজ বিষয়ে মোট ৩৭,২০,০৯৪ টি অতিরিক্ত ক্লাস নেন এবং এর ফলে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ইংরেজি,গণিত এবং বিজ্ঞান বিষয়ে ভীতি দূর হয় এবং শিক্ষার্থীরা কোচিং বিমুখ হয়।
এছাড়াও এই এসিটিরা স্ব স্ব উপজেলায় বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ যেমন বাল্যবিবাহ রোধ,যৌতুক প্রথা রোধ,শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সৃষ্টি,পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সৃষ্টির কাজে অংশগ্রহণ করেন।যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে।
কিন্তু সেকায়েপ শিক্ষকদের মেয়াদ ৩ বছর হলেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এবং এসিটি অপারেশন ম্যানুয়াল-২০১৫ এর ৩৬ নং ধারা অনুযায়ী শিক্ষার মানোন্নয়নে অভিজ্ঞতা এবং কোয়ালিটি বিবেচনা করে এসিটিদের স্থায়ীকরণের কথা উল্লেখ আছে।
উল্লেখ্য যে,বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে সেকেয়েপের এসিটি কম্পোনেন্ট একটি সফল কম্পোনেন্ট।কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত এই মডেল মেধাবি শিক্ষকদের কোন স্থায়ী ব্যবস্থা করতে পারেনি।ইতোমধ্যে সকল জেলা থেকে আপনার সুদৃষ্টি কামনার জন্য মাননীয় মন্ত্রি,মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, মাননীয় এম.পি ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থায়ীকরণের জন্য স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।সে হিসাবে চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে এসিটিদের পক্ষে স্মারকলিপি প্রদান করেন এসিটি সুমন ইকবাল এবং শোভন রবিউল।
হে মানবতার মা,
শিক্ষার আলো জ্বালাতে এসে সেই শিক্ষকরাই আজ অন্ধকারে কারণ গত ৩১ মাস তাদের নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। ফলে তারা একপ্রকার হতাশাগ্রস্ত জীবন যাপন করছে।হে মানবতার মা আপনিই পারেন এই মডেল এবং মেধাবি শিক্ষকদের হতাশা দূর করে আশার আলো জ্বালাতে।গত ৩১ মাস তারা চাকরি হরিয়ে সামাজিকভাবে, অার্থিকভাবে এবং পারিবিরিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছে।উল্লেখ্য যে, এই মডেল শিক্ষকদের অধিকাংশই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ম শ্রেণি প্রাপ্ত।
তাই আপনার কাছে বিনীত প্রার্থনা এই যে,আপনি আপনার ব্যাক্তিগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এবং মানবিক দিক বিবেচনা করে এই মেধাবি মডেল শিক্ষকদের হারিয়ে যাওয়া মর্যাদা ফিরিয়ে দেবেন এবং তাদেরকে এসইডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভুমিকা রাখবেন।আপনার মুখের দিকেই তাকিয়ে আছে ৫২০০ জন শিক্ষকদের পরিবার।
নুরুল হক, কিশোরগঞ্জ